
শ্যামল-সাইদুল পরিষদের দূরদর্শী নেতৃত্বে থাকা নবীনগর প্রেসক্লাব স্মরণ কালের উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন আনন্দ ভ্রমণ আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৮ নভেম্বর ছিল সিলেট আনন্দ ভ্রমণ কমিটির আহবায়ক আরিফুল ইসলাম মিনাজ এবং সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে সিলেট ভ্রমণ কর্মসূচি।
গত ৮ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ছয়টার মধ্যেই সকলে সমবায় মার্কেটের সামনে চলে আসেন। তিশা সার্ভিসের বাস সময় মত হাজির। সাথে মান্যবর দুই অভিভাবক ধ্রুবতারা -একজন প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু কামাল খন্দকার স্যার,আরেকজন মহিলা ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কান্তিকুমার ভট্টাচার্য (কান্তি দা)। আবার প্রেসক্লাবের সাবেক তিনবারের সভাপতি লিটন ভাই এবং সাবেক সভাপতি জালাল ভাইয়ের তৎপরতাও ছিল প্রশংসনীয় এবং বাদ বাকি সদস্যরাও ছিল একে অপরের প্রতি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং প্রাণবন্ত আন্তরিক।
ইতিমধ্যে ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৭টায়, গাড়িতে সবার আসন গ্রহণ শেষে এবার গাড়ি যাত্রা করলো সিলেটের উদ্দেশে। সীমাহীন আনন্দমনে গাড়ির ভিতর কেউ মোবাইলে বিভিন্ন প্রোগ্রাম দেখায় মগ্ন,কেউবা পথের প্রাকৃতিক দৃশ্যে আবহমান বাংলার রূপ দর্শণে কাব্যিক মনে গুনগুন গান করে যেন হাওয়ায় উড়ে নিজেকে হারিয়ে পথ চলছে । বাস্তবতা হচ্ছে আগেকার মত সিলেট যাওয়ার পথে দুই পাশের সেই প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য, হাওর বাওর পাখ-পাখালির দেখা মিলেনা বললেই চলে। মানব তৈরি ইট পাথরের দালান কোঠার ভিড়ে অনেকটায় যেন প্রকৃতি অভিমান করে ম্লান হয়ে বসে আছে।তারপরও কতশত ভ্রমণ পিপাসু মন,ওলি আউলিয়ার পূর্ণ ভূমি সিলেটের বিভিন্ন দর্শণযোগ্য স্থান পরিদর্শন করার জন্যে আসা-যাওয়া হয়তো অব্যাহত আছে বা থাকবে।বাস চলতে চলতে দুপুর প্রায় একটার সময় আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা নিরাপদে পৌঁছালাম সিলেটে।
সিলেট পৌঁছে প্রথমেই হযরত শাহজালাল (র:)মাজার মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় শেষে মাজার জিয়ারত,পরক্ষণে কাচ্চি ডাইনিংয়ে দুপুরে কাচ্ছির সাথে বোরহানি ভালোই ভূঁড়ি ভোজন হয়েছিল। দুপুরের খাবার দাবার শেষে বিকাল ৪টায় আমরা উপস্থিত হলাম হযরত শাহপরান (র:)মাজারে তারপর আসরের নামাজ আদায়,মাজার জিয়ারত। তবে এখানে উজ্জ্বল ভাইয়ের সৌজন্যে চায়ের আড্ডা বেশ জমে ছিল।
দিনশেষে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলো। আমাদের গাড়ি রওয়ানা হলো জাফলং এর উদ্দেশে। আমাদের বাস যখন জৈন্তা দিয়ে চলছিল, তখন কামাল স্যার আমার সাথে বলতে ছিল জৈন্তা রানীর ঐতিহ্য ও ইতিহাস। এমনি করে চলতে চলতে রাত প্রায় আটটা ত্রিশ মিনিটে আমরা পৌছালাম জাফলং রিসোর্টে।গাড়ি থেকে নেমে ক্লান্ত সবাই যার যার রুম বুঝে নিলাম, ফাঁকে সবাই ফ্রেশ হয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে যার যার স্বজনদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ সেরে রাত দশটার দিকে রাতের ডিনার শেষ হলো। এরপর যে যার মত করে ঘুমিয়ে পড়ল।
পরদিন শনিবার সকাল, পূর্বের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকাল ৮টার সময় আমাদের বহনকারী গাড়ি যাত্রা করল জাফলং এর বিভিন্ন পর্যটন স্পট দর্শণের উদ্দেশে। আমরা জাফলং এর বাংলাদেশ- ভারত জিরো পয়েন্টে পৌছালাম সকাল প্রায় ৮:৩০ মিনিটে। গাড়ি থেকে নেমে গ্রুপ ছবি তুলে তড়িগড়ি করে ছুটে চল্লাম সবাই আকাশ ছোঁয়া পাহাড় বেষ্টিত ভারত-বাংলাদেশের জিরো পয়েন্টের মনোরম দৃশ্য অবলোকনে। বিভিন্ন স্পট পরিদর্শন শেষে কিছু কেনা কাটা সেরে ,সবাই সকালের নাস্তার টেবিল আসেন। নাস্তা শেষে আমাদের বহনকারী গাড়ি যাত্রা করল ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের ঝর্ণায় গোসল করার উদ্দেশে। ভোলাগঞ্জ আমরা পৌছালাম শনিবার দুপুর প্রায় ১২:৩০মিনিটে। তারপর নৌকায় নদী পার হয়ে শুরু হলো ঝর্ণার পানিতে সকলের আনন্দ গোসল।গোসল সেরে দুপুর ৩টায় সবাই একসাথে খাবার সেরে এবং যার যেমন আবার কেনাকাটা শেষ করতে বিকেল হয়ে আসে।
এবার সকল প্রস্তুতি শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরতি যাত্রা। পথে যাত্রা বিরতি রাতের ডিনার শায়েস্তাগঞ্জ পানসি হোটেলে। এমনি করে এক সময় আল্লাহর অশেষ মহিমায় আমাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন রাত্র সাড়ে বারোটায় প্রিয় জন্মভূমি নবীনগরে।
বৈচিত্র্যময় আনন্দও অভিজ্ঞতা নিয়ে সবাই চলে গেলাম যার যার নীড়ে। (বিশেষ দ্রষ্টব্য :যারা ব্যক্তিগত সমস্যায় আনন্দ ভ্রমণে অংশগ্রহণ করতে পারে নাই যেমন:- কল্লোল ভাই,নবী ভাই, ছোট ভাই আলমগীর. নূরে আলম ও মিঠু, তাদের তাদের অভাব সবসময় আমাদের অনুভূতিতে ছিল )
পরিশেষ: পিকনিকের স্মৃতিময় স্মৃতিতে, প্রেসক্লাবের সবাই,সবার হয়ে বেঁচে থাকুক
প্রীতিময় বন্ধনের প্রীতিতে।
ভালো থাকুক সবাই, ধন্যবাদ সকলকে।
মোহাম্মদ হোসেন শান্তি।