ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
নবীনগরে শুরু হচ্ছে ‘লাখ টাকার গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এর জমজমাট কোয়ার্টার ফাইনাল নবীনগরে মালবাহী ট্রাকের চাপেই ভেঙে পড়ল আরসিসি ব্রিজ, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ নবীনগরে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির গতি বাড়াতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত নবীনগরে শ্যালকের হামলায় দুই বোনজামাই হাসপাতালে নবীনগরে সার্বজনীন গ্রুপের ‘ফ্রি অলরাউন্ডার প্রশিক্ষণ’ কর্মশালার সপ্তম ক্লাস অনুষ্ঠিত নবীনগর সার্বজনীন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মুখপাত্র হলেন জামাল হোসেন পান্না গোপালপুর দক্ষিণ কবরস্থানের উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন ঈদে বাড়ি ফেরার পথে মেঘনায় প্রাণ গেল বউ-শাশুড়ির নবীনগরে ঈদের জামাত শেষে মুসল্লীদের সাথে ইউএনও রাজীব চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় তরুণ সমাজকে দক্ষ ও আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করতে সার্বজনীন গ্রুপের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
নোটিশ :

✍️সংবাদদাতা আবশ্যক👉'দেশ বিদেশ নিউজ ২৪.কম' এর জন্য জরুরী ভিত্তিতে দেশের প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে।আগ্রহীরা মেইলে যোগাযোগ করুন।

নতুন ধান উঠলেও দাম কমেনি! নেপথ্যে কারা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৭:০০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩৯০ বার পড়া হয়েছে

নতুন আমন ধানের মৌসুম শুরুতেই চালের বাজার দর হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা। চালের বাজার এখন সিন্ডিকেটের দখলে তাই দাম বেড়েছে বলে চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন। আর চালের আড়তদার ও মিল মালিকরা বলছেন ধানের সংকট দেখা দেওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সংকটে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও দিনমজুর পরিবারগুলো।

রোববার রংপুরের মাহিগঞ্জ চালের আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি ২৫ কেজি ওজনের চালের বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ টাকা থেকে আড়াইশ টাকা। একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে রংপুর সিটি বাজারেও চালের পাইকারি দোকানগুলোতে। তবে খুচরা পর্যায়ে চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা বেশি দামে। যা গত সপ্তাহে ছিল এর চেয়ে কম। বাজারে এখন মোটা জাতের স্বর্ণা চালের দাম বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৪৩ থেকে ৪৬ টাকায়। গত এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা। একইভাবে এক সপ্তাহ আগে চিকন জাতের চাল মিনিকেট বাজারে পাওয়া যেত ৬৯ টাকা থেকে ৭২ টাকা কেজিতে। যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ থেকে ৭৩ টাকা প্রতি কেজি। রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারেও চালের দাম একইভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রংপুর সিটি বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন জানান, হঠাৎ করে এক সপ্তাহে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। কারণ হিসাবে তিনি বলছেন চালের বাজারদর সিন্ডিকেটের দখলে চলে যাওয়ায় তাদের প্রতি ২৫ কেজি চালের বস্তা ২০০ টাকা থেকে আড়াইশ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। গ্রামের হাট-বাজারে এখন চাল প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

খাদ্য ভান্ডার নামে খ্যাত দিনাজপুর থেকে দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৩৫ ভাগ চাল সরবরাহ হয় বিভিন্ন জেলায়। দিনাজপুরের প্রধান চালের বাজার বাহাদুর বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর জেলার হাট-বাজারের মতো একই হারে চালের দাম বেড়ে গেছে। বাহাদুরবাজার এনএ মার্কেটে শনিবার গিয়ে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিআর-২৮ জাতের চাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা দরে, মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রকার ভেদে ৭২ ও ৭৪ টাকায়, গুটি স্বর্ণা প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা দরে। এছাড়াও কাটারি সিদ্ধ ১১০ টাকা দরে, নাজিরশাইল ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা, ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে ২শ থেকে ২৫০ টাকা। তবে মোটা জাতের দাম ব্যাপক বাড়লেও চিকন চালের দাম বেড়েছে সামান্য।

এনএ মার্কেটের চাল বিক্রেতারা জানান, মিল মালিকরা হঠাৎ চালের দাম বৃদ্ধি করায় বেড়েছে চালের দাম। চাল বিক্রেতা লিয়াকত আলী জানান, তারা মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল এনে বিক্রি করেন, নতুন ধান ওঠায় যেখানে দাম কমার কথা, সেখানে মিল মালিকরা হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। হঠাৎ বাড়তি দামে চাল বিক্রি করতে গিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে তাদের প্রায়ই বচসা বাঁধছে। তবে তিনি বলেন-চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কমেছে বেচাকেনা।

দিনাজপুর জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোসাদ্দেক হুসেন বলেন-বাজারে নতুন ধান উঠেছে ঠিকই, কিন্তু প্রতিদিন বাড়ছে ধানের দাম। নতুন মোটা জাতের ধান বিক্রি কিনতে হচ্ছে প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) ২ হাজার ৬শ টাকা দরে। তিনি বলেন, আমরা ধান কিনে চাল তৈরি করে বিক্রি করি। বাজারে ধানের দাম বাড়লে আমাদের অবশ্যই বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হবে, নইলে মিল বন্ধ করে দিতে হবে। মোসাদ্দেক হুসেন বলেন, বোরো ধান কৃষকরা ঘরে রাখতে না পারলেও আমন ধান বাড়িতে রাখতে পারে। এজন্য কৃষকরা বাড়তি দামের আশায় তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ধান বিক্রি করছে। এর ফলেই বাজারে বেড়েছে ধানের দাম।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

নবীনগরে শুরু হচ্ছে ‘লাখ টাকার গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এর জমজমাট কোয়ার্টার ফাইনাল

নতুন ধান উঠলেও দাম কমেনি! নেপথ্যে কারা

আপডেট সময় ০৭:০০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নতুন আমন ধানের মৌসুম শুরুতেই চালের বাজার দর হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা। চালের বাজার এখন সিন্ডিকেটের দখলে তাই দাম বেড়েছে বলে চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন। আর চালের আড়তদার ও মিল মালিকরা বলছেন ধানের সংকট দেখা দেওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সংকটে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও দিনমজুর পরিবারগুলো।

রোববার রংপুরের মাহিগঞ্জ চালের আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি ২৫ কেজি ওজনের চালের বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ টাকা থেকে আড়াইশ টাকা। একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে রংপুর সিটি বাজারেও চালের পাইকারি দোকানগুলোতে। তবে খুচরা পর্যায়ে চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা বেশি দামে। যা গত সপ্তাহে ছিল এর চেয়ে কম। বাজারে এখন মোটা জাতের স্বর্ণা চালের দাম বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৪৩ থেকে ৪৬ টাকায়। গত এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা। একইভাবে এক সপ্তাহ আগে চিকন জাতের চাল মিনিকেট বাজারে পাওয়া যেত ৬৯ টাকা থেকে ৭২ টাকা কেজিতে। যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ থেকে ৭৩ টাকা প্রতি কেজি। রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারেও চালের দাম একইভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রংপুর সিটি বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন জানান, হঠাৎ করে এক সপ্তাহে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। কারণ হিসাবে তিনি বলছেন চালের বাজারদর সিন্ডিকেটের দখলে চলে যাওয়ায় তাদের প্রতি ২৫ কেজি চালের বস্তা ২০০ টাকা থেকে আড়াইশ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। গ্রামের হাট-বাজারে এখন চাল প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

খাদ্য ভান্ডার নামে খ্যাত দিনাজপুর থেকে দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৩৫ ভাগ চাল সরবরাহ হয় বিভিন্ন জেলায়। দিনাজপুরের প্রধান চালের বাজার বাহাদুর বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর জেলার হাট-বাজারের মতো একই হারে চালের দাম বেড়ে গেছে। বাহাদুরবাজার এনএ মার্কেটে শনিবার গিয়ে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিআর-২৮ জাতের চাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা দরে, মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রকার ভেদে ৭২ ও ৭৪ টাকায়, গুটি স্বর্ণা প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা দরে। এছাড়াও কাটারি সিদ্ধ ১১০ টাকা দরে, নাজিরশাইল ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা, ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে ২শ থেকে ২৫০ টাকা। তবে মোটা জাতের দাম ব্যাপক বাড়লেও চিকন চালের দাম বেড়েছে সামান্য।

এনএ মার্কেটের চাল বিক্রেতারা জানান, মিল মালিকরা হঠাৎ চালের দাম বৃদ্ধি করায় বেড়েছে চালের দাম। চাল বিক্রেতা লিয়াকত আলী জানান, তারা মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল এনে বিক্রি করেন, নতুন ধান ওঠায় যেখানে দাম কমার কথা, সেখানে মিল মালিকরা হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। হঠাৎ বাড়তি দামে চাল বিক্রি করতে গিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে তাদের প্রায়ই বচসা বাঁধছে। তবে তিনি বলেন-চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কমেছে বেচাকেনা।

দিনাজপুর জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোসাদ্দেক হুসেন বলেন-বাজারে নতুন ধান উঠেছে ঠিকই, কিন্তু প্রতিদিন বাড়ছে ধানের দাম। নতুন মোটা জাতের ধান বিক্রি কিনতে হচ্ছে প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) ২ হাজার ৬শ টাকা দরে। তিনি বলেন, আমরা ধান কিনে চাল তৈরি করে বিক্রি করি। বাজারে ধানের দাম বাড়লে আমাদের অবশ্যই বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হবে, নইলে মিল বন্ধ করে দিতে হবে। মোসাদ্দেক হুসেন বলেন, বোরো ধান কৃষকরা ঘরে রাখতে না পারলেও আমন ধান বাড়িতে রাখতে পারে। এজন্য কৃষকরা বাড়তি দামের আশায় তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ধান বিক্রি করছে। এর ফলেই বাজারে বেড়েছে ধানের দাম।